
সরওয়ার আলম শাহীন/ওবাইদুল হক চৌধুরী
উখিয়া নিউজ ডটকম::

উখিয়া-টেকনাফের সরকার দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদির সাথে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেনের ইনানী সৈকতে হঠাৎ তোলা একটি ছবি নিয়ে উখিয়া টেকনাফে চলছে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক। এই ছবির সুত্র ধরে বিভিন্ন ভাবে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিক রিপোর্টও হয়েছে। চলছে সুবিধাবাদী মহলের অপতৎপরতা। অনেকে বিএনপির এই আইনজীবীর সাথে এমপি আবদুর রহমান বদির তোলা ছবিটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এমপি বদির সাথে রাজনৈতিক ভাবে পরীক্ষিত উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীকে টার্গেটে পরিনত করেছে ষড়যন্ত্রকারী মহলটি। স্থানীয় সচেতন মহলের অনেকেই বিতর্কের বিষয়টিকে ভাল ছোখে দেখছেন না। তাদের মতে, বিভিন্ন সময় দেশের আনাচে কানাচে আওয়ামীলীগ নেতার সাথে বিএনপি,বিএনপি নেতার সাথে আওয়ামীলীগ নেতার কথা হচ্ছে,দেখা সাক্ষাত হচ্ছে। এটা গঠনতন্ত্রের একটি অনন্য রুপ। একে -অপরের সাথে দেখা সাক্কাত হলে গণতন্ত্রের ভীত মজবুত হয়। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মাহবুব হোসেনের সাথে এমপি বদির দেখা হয়ে ছবি তোলা সৌজন্যতা মাত্র। এটা নিয়ে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি গণতন্ত্রের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবেনা। কারো সাথে সাক্ষাত করলেই ঐদলে যোগদান করতে হবে এটা কেমন কথা? অতীতেও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা অন্যদলের নেতাদের সাথে ছবি তুলেছেন,কথা বলেছেন। সম্প্রীত পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্টানে আওয়ামীলীগ দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদির সাথে উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী পাশাপাশি বসে ছবি তুলেছেন,কথা বলেছেন। তাই বলে কি আমরা বলব সরওয়ার জাহান চৌধুরী আওয়ামীলীগে যোগদান করার জন্যই তার সাথে ছবি তুলেছেন। ইনানী সৈকতে তোলা এ নিয়ে ফেইসবুকেও চলছে সমান বিতর্ক। ফেইসবুকে এ নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেছেন অনেকেই। ফেইসবুকে মহিউদ্দিন লিখেছেন, মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী সহ অন্যান্যরাও বিরোধী দলের সম্মানিত সিনিয়র নেতৃত্বের সঙ্গে যিনি একজন বরেণ্য আইনজীবিও, উম্মুক্ত স্থানে স্বাক্ষাত ও কুশল বিনিময় করেছেন। এ বিষয়টি যদি ইতিবাচক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয় তাহলে এত আলোচনা-সমালোচনার বিষয় কি থাকে!কেননা সরকারি দল ও বিরোধী দল মিলেই তো গণতন্ত্রের ভীতটা গড়ে উঠে। এমনতো বিষয় নেই যে বিরোধী দলের কারো সঙ্গে সরকারি দলের কেউ মুখ দেখাদেখি করা অন্যায়! আমাদের মাননীয় সাংসদ তিনি সকলের সাথে মিশেন,ছোট কিংবা বড়। এটা পজিটিব পলিটিক্স। যেখানে মহান সংসদেই সরকার ও বিরোধী সহ অবস্থান একটি সাংবিধানিক পন্থা সেখানে স্বাক্ষাত সমালোচনা,কেন? গনমাধ্যমইতো বড় বড় কলাম লিখে বিরোধী দলের সাথে বসে সুন্দর গণতান্ত্রিক পরিবেশের কথা বলা হয়। কিন্তু যখনি বসে তখনই নেতিবাচকটা খোজা হয়। রাজনীতির চর্চা হয় সহাবস্থানে আর দলীয় মতভেদটা আদর্শিক ব্যক্তিগত নয়। আদর্শিক বিরোধ যদি ব্যক্তিগত বিরোধে রূপান্তর করানো হয় সেখানে সুষ্ট রাজনীতি চর্চার পরিবেশ থাকতে পারেনা। বঙ্গবন্ধু কি মাওলানা ভাসানীর সাথে বসেননি? অথচ মাওলানা ভাসানী আওয়ামীলীগ ছেড়ে তখন ন্যাপ গঠন করেছেন।বঙ্গবন্ধুতো মাও: ভাসানীকে শ্রদ্ধাভরে সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। সমালোচনা করারতো কারণ থাকতেই পারে, তাইবলে কুশলাদি বিনিময় নিয়েও! একজন নেতা যখন জনবান্ধব হন তখন কিছু সুবিধা প্রত্যাশিদের ক্ষতি হয়। তাই হয়তো এত সমালোচনা। এ ব্যাপারে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঐদিন মাননীয় এমপি আব্দুর রহমান বদির সাথে আমাদের চেয়ারম্যানদের একটি বৈঠক ছিল,বৈঠক শেষে আমরা যখন ইনানী সৈকতে নামছিলাম, তখন হঠাৎ বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার খন্দকার মাহবুব হোসেনের সাথে দেখা,সৌজন্যতার খাতিরে তার সাথে ছবি তোলা। এতে দোষের কি আছে বুঝলাম না। এখনতো দেখছি কারো সাথে ছবিও তোলা যাবেনা। এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, একটি স্বার্থনেস্বী মহল উখিয়া টেকনাফের উন্নয়ন সহ্য করতে না পেরে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। ছবি নিয়ে রাজনীতি তাদের অপতৎপরতায় অংশ বিশেষ মাত্র। এসব করে উখিয়া আওয়ামীলীগে বিবেদ সৃষ্টি করা যাবেনা। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। দলের জন্য কার অবদান কতটুকু তা এলাকার জনগন ভালো করেই জানেন।
পাঠকের মতামত